কওমী মাদ্রাসায় অনেক ছাত্র আছে, যারা কওমি মাদরাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি আলিয়া মাদরাসার সরকারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চায়। কেউ কেউ আবার কওমি মাদরাসার পড়াশোনা শেষ করার পর আলিয়া মাদরাসার সার্টিফিকেট অর্জন করতে আগ্রহী থাকে।
আলিয়া মাদরাসার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। এছাড়া, সরকারি চাকরিসহ নানান কর্মক্ষেত্রে এটি অতিরিক্ত সুবিধা এনে দিতে পারে। তাই অনেক ছাত্র ও অভিভাবক চায়, কওমি মাদরাসার মূল পড়াশোনার পাশাপাশি তারা যেন আলিয়ার পরীক্ষার জন্যও প্রস্তুতি নিতে পারে।
তবে চাইলেই আলিয়ার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়। এটি শুধু পরীক্ষায় বসার বিষয় নয়, বরং একটি পরিকল্পিত প্রস্তুতি ও সঠিক গাইডলাইনের প্রয়োজন হয়। অনেক ছাত্রই আলিয়া পরীক্ষা দেওয়ার উপযুক্ত লাইনঘাট খুঁজে পায় না বা সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে না। আমাদের মাদরাসা এই সমস্যার সমাধানে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যাতে ছাত্ররা সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে সক্ষম হয়।
আমরা আমাদের মাদরাসা থেকে নির্দিষ্ট কিছু শর্তসাপেক্ষে ছাত্রদের আলিয়ার পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ ও দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকি। আমাদের অন্যতম প্রধান শর্ত হলো, ছাত্রদের যথেষ্ট মেধাবী এবং আগ্রহী হতে হবে। কারণ, কওমি মাদরাসার পড়াশোনার ক্ষতি না করে অতিরিক্ত আলিয়া মাদরাসার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সহজ কাজ নয়। এজন্য পড়াশোনায় মনোযোগী, পরিশ্রমী ও সময় ব্যবস্থাপনায় দক্ষ ছাত্রদেরই এই সুযোগ দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় শর্ত হলো, ছাত্রদের অভিভাবকদের আগ্রহ ও সম্মতি থাকা আবশ্যক। কারণ, এটি শুধু একজন ছাত্রের একক সিদ্ধান্ত নয়; বরং তার পরিবারের সম্মতি এবং মাদরাসা কর্তৃপক্ষের অনুমোদনও প্রয়োজন। অভিভাবকরা যদি মনে করেন, তাদের সন্তান অতিরিক্ত চাপ সামলানোর সক্ষমতা রাখে এবং কওমি মাদ্রাসার পড়াশোনায় ব্যাঘাত না ঘটিয়ে আলিয়া পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারবে, তাহলে তারা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করতে পারেন।
আমাদের এই বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে অনেক ছাত্র ইতোমধ্যে সফলভাবে আলিয়া মাদ্রাসার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে এবং ভালো ফলাফল অর্জন করেছে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতেও এই সুযোগ আমাদের ছাত্রদের জন্য আরও সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করবে এবং তাদের জীবনকে সাফল্যমণ্ডিত করবে, ইনশাআল্লাহ।
Facebook Comments